জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য আর্থসামাজিক উন্নতি করা। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যুক্ত হন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশের অবস্থা যেন আরও দৃঢ় হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হবার সুযোগ পেয়েছি। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিকভাবে স্থবির করে দিয়েছে। আমরা আমাদের সীমিত শক্তি নিয়ে অর্থনীতির গতি সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছি। চেষ্টা করছি দেশকে এগিয়ে নিতে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাশাপাশি আমরা অবকাঠামো উন্নয়নের বড় বড় অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। এ দেশের মানুষের উপযুক্ত বসবাসের জন্য করার একটা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। তারই ভিত্তিতে বর্তমানে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অবকাঠামোর মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবাহিনী তার মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময় জাতি গঠনের কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। বর্তমানে করোনাভাইরাস সারাবিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। করোনাকালে সময়ে বিমানবাহিনী যথেষ্ট দায়িত্ব পালন করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে বিমানবাহিনী হেলিকপ্টারে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে করোনা আক্রান্ত অনেক রোগীকে ঢাকায় এনেছে। এতে অনেকে উন্নত চিকিৎসা পেয়েছে। জীবন রক্ষা পেয়েছে।
তিনি বলেন, বিমানবাহিনীর এই কার্যক্রম বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো সময়মতো নিয়ে এসেছেন বিমানবাহিনী। করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমানবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, লেবাননের সংগঠিত ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর সেখান থেকেও বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমানবাহিনী ভূমিকা রেখেছে। অন্যান্য দেশে যখন কোনো দুর্যোগ দেখা দিয়েছে, আমরা যখন রিলিফ পাঠিয়েছি বা চিকিৎসার জন্য ডাক্তার পাঠিয়েছি তখনও ভূমিকা রেখেছেন।
বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাগণের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষ আনতে বিমানবাহিনী একাডেমির জন্য এই ঘাঁটিতে নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’। মহাকাশ গবেষণা, দেশের বিমানবাহিনী এবং বেসামরিক বিমানকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করছি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’। যেটা লালমনিরহাটে প্রতিষ্ঠা হবে। ইতোমধ্যে তার কাজ আমরা শুরু করেছি। এই সব কার্যক্রম বিমানবাহিনীর সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। আজ বাংলাদেশ বিমানবাহিনী দেশে ও দেশের বাইরে এক সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া জাতিসংঘ মিশনেও বাংলাদেশ ভূমিকা রাখছে। সেক্ষেত্রেও বিমানবাহিনীকে আমরা উপযুক্ত করে গড়ে তুলছি।
‘আমাদের আকাঙ্ক্ষা আছে, বাংলাদেশেই আমরা আমাদের যুদ্ধ বিমান তৈরি করতে পারব। কাজেই এর ওপর গবেষণা করা এবং আমাদের আকাশসীমা রক্ষা আমরা নিজেরাও যেন করতে পারি সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আমরা এ ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করব।’