বন্ধঘোষিত পাটকলগুলো লিজের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালুর মৌলনীতিতে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে কারখানা পরিদর্শক অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য কাজ করছেন; শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এমন একটি চিঠিতে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে জড়ানো হয়েছে, কমিটির আগের বৈঠকে এমন যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল তা সত্য নয় বলে দাবি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রোববারের বৈঠকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ওয়াসিফ নিট কম্পোজিট লি. গাজিপুরের মালিক বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ এবং বকেয়া পরিশোধ না করা নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে ২০১৯ সালের ২৭ মে সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে মালিক-শ্রমিক নেতা এবং কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের কর্মকতাদের সঙ্গে সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে শ্রম পরিদর্শক উজ্জল দেব ও জালাল খান উপস্থিত ছিলেন। ওইদিন একই সময়ে এমপির চেম্বারে কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শেখ আসাদুজ্জামান সহকারী এবং সহকারী মহাপরিদর্শক জাকির হোসেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া উপস্থিত ছিলেন।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করে কোনো সভায় যোগ দেওয়ার কারণে তাদের কর্মকাণ্ড অসদাচরণ প্রমাণ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এ মামলা বিচারাধীন। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে শাজাহান খানকে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট করা হয়নি বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে কমিটির সদস্য শাজাহান খানের অফিসে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে দুই জন কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য কাজ করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করায় শাজাহান খান অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে কমিটির সদস্য শাসমুন নাহারকে ওই প্রতিবেদনটি পুনঃতদন্ত করার জন্য কমিটি দায়িত্ব দেয়।
বৈঠকে শ্রমিকদের পাওনা দ্রুত পরিশোধের লক্ষ্যে শ্রমিকদের করা অনিষ্পন্ন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি মো. মুজিবুল হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শাজাহান খান, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং শামসুন নাহার অংশ নেন।
কমিটি তার আগের বৈঠকে বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো পুনরায় চালু করার সুপারিশ করেছিল। ওই সুপারিশের অগ্রগতি অবহিত করতে গিয়ে কমিটিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)’র নিয়ন্ত্রণাধীন বন্ধ ঘোষিত পাটকলগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিল চালুর জন্য লিজ বা ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুসরণীয় মৌলনীতি ও কর্মপরিকল্পনায় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মিলগুলি চালু করা সম্ভব হলে অবসায়ন করা শ্রমিকদের মধ্যে অভিজ্ঞ ও দক্ষ শ্রমিকরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়।