

ছাবিনা খাতুন।
পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের চৌবাড়িয়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের নির্দেশে এক গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে চৌবাড়িয়া মহল্লার সুলতান মাহমুদ সুজনের বাড়িতে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছাবিনা খাতুন (২৫) কে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্র জানায়, প্রায় আট মাস আগে প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের চৌবাড়িয়া মহল্লার প্রবাসী আব্দুর রশিদ বাবলুর ছেলে সুলতান মাহমুদ সুজন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে একই মহল্লার আব্দুস সাত্তারের কন্যা ছাবিনাকে বিয়ে করে। পরে তারা দুজনই পরিবারের কাছে বিষয়টি গোপন রেখে একসঙ্গে জেলার ঈশ্বরদীতে চাকরি নিয়ে বসবাস করতে থাকে।
সম্প্রতি সুজনের প্রথম স্ত্রী মিষ্টি তার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানতে পারে। এ নিয়ে মিষ্টি তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে উদ্যোগ নেয়। একপর্যায়ে নকল বিয়ে করার কথা বলে সুজন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ছাবিনাকে অস্বীকার করে। নিরুপায় হয়ে ছাবিনা গত বুধবার রাতে সুজনের বিরুদ্ধে ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে ছাবিনা তার মায়ের সঙ্গে সুজনের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর অধিকার দাবি করে। এ সময় সুজনের অনুপস্থিতিতে সুজনের প্রথম স্ত্রী ও মা ছাবিনার মাকে মারধর করে আহত করে। তখন পুলিশ গিয়ে ছাবিনার মাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এরপর থেকে ছাবিনা সুজনের বাড়িতে অবস্থান নেয়। পরে রাত ৯টার দিকে সুজনের আত্মীয় চৌবাড়িয়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম সুজনের বাড়িতে গিয়ে ছাবিনাকে মারধরের নির্দেশ দেয়। তার নির্দেশে সুজনের স্ত্রী, শ্বাশুরি ও মা লাঠি দিয়ে ছাবিনাকে বেদম পেটায়। এ সময় ছাবিনার চিৎকারে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে থানা পুলিশের এএসআই রাজু আহমেদ ও সেলিম আহমেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তারা ছাবিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সুজন ও ছাবিনা দুইজনই আমার আত্মীয়। তাই তাদের বাড়িতে আত্মীয় হিসেবে আমি উপস্থিত হয়েছিলাম। কিন্তু কাউকেই আমি মারধরের কোনো নির্দেশ দেয়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে মেয়েটি।’
ভাঙ্গুড়া থানার ডিউটি অফিসার এএসআই রাজু আহমেদ জানান, শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওই নারীকে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করেছে। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর অভিযুক্তদের আটক করা হবে।